শ্রদ্ধাঞ্জলি---অঞ্জলি ভট্টাচার্য

 

শ্রদ্ধাঞ্জলি---অঞ্জলি ভট্টাচার্য

 


        অঞ্জলি ভট্টাচার্য্য---এই নামটির সাথে জামশেদপুরের অনেকেই পরিচিত। বিশেষ করে যারা পুরোনো বাসিন্দা। জামশেদপুরের বাইরে তিনি পরিচিত ছিলেন বাঙালি সমিতির সক্রিয় সদস্য হিসেবে।

          জামশেদপুরের সেই সময়ের নামকরা স্কুল, সাকচী হাইস্কুলের উজ্জ্বল ছাত্রী অঞ্জলি ভট্টাচার্য্য ম‍্যাট্রিক পাশ করেন খুব ই ভালো রেজাল্ট করে।  স্কুল কলেজে স্কলারশিপ নিয়ে ই পড়াশোনা।। ম‍্যাট্রিক পাশের পর নিজের স্কুলের মর্ণিং সেকশনে শিক্ষকতা আর সন্ধ্যায় কো-অপারেটিভ কলেজে পড়াশোনা শুরু করেন। অঙ্ক ও স্ট‍্যাটিসটিক নিয়ে B.A পাশ করার পর রাঁচির থারপাখনা গার্লস হাইস্কুলে অঙ্কের টিচার হিসেবে যোগ দিলেন। বছর দুই পরে নিজের প্রিয় জন্মভূমি জামশেদপুরে ফিরে এসে যোগ দিলেন L.I.C তে। ছোট থেকেই খেলাধুলায় দক্ষ অঞ্জলিদি স্কুল, কলেজ ও পরে L.I.C র চ‍্যাম্পিয়ন ছিলেন।

         নাটকেও পারদর্শী অঞ্জলিদি যোগ দেন I.P.T.A তে। স্বামী সুকুমার ভট্টাচার্য্য ও I.P.T.A র সদস্য ছিলেন। সংসার জীবনের সাথে সাথে নাটক ও সমাজ সেবার কাজ শুরু করলেন। যেখানেই মেয়েদের বিপদের খবর পেয়েছেন সেখানেই তিনি ও তাঁর সহকর্মীরা ছুটে গেছেন।

          এই সময় তিনি যোগ দেন বিহার বাঙালি সমিতি, নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলন,

প্রজ্ঞা ভারতী, রবীন্দ্র সাহিত্য চর্চা কেন্দ্র 'বুধসন্ধ‍্যা'তে।

           মন-প্রাণ দিয়ে ভালবেসেছিলেন সমিতির কার্যকলাপকে। তাই ভাগলপুর, পাটনা, গয়া, পূর্ণিয়া, রাঁচি সহ সব জায়গায় গেছেন মিটিং এ যোগ দিতে। কার্মাটাঁডে বিদ‍্যাসাগর প্রতিষ্ঠিত স্কুলের জন্যে আঁচল পেতে অর্থ সাহায্য চাইতে যেমন দ্বিধা করেননি , তেমনি নিজের সঞ্চিত অর্থ ও দিয়েছেন হাসিমুখে। তাঁর সুযোগ‍্য পুত্র সুমন ও আমেরিকা থেকে অর্থ সংগ্রহ করে পাঠিয়েছে এই স্কুলের জন্যে। অন‍্যান‍্য সংস্থাতেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সব সময়।

        তিনি ছিলেন বেঙ্গলী অ্যাসোসিয়েশন ঝাড়খণ্ড এর প্রাক্তন সহ সভাপতি। বিদ‍্যাসাগর স্মৃতি রক্ষা সমিতি, নন্দনকানন, কার্মাটাঁড এর কার্যকারী সমিতির সদস্য। শরীর সহযোগিতা না করায় তিনি অবসর নেন। অবসর জীবনের সঙ্গী ছিল রামকৃষ্ণকথামৃত ,গীতা, কোরান, বাইবেল, রবীন্দ্ররচনাবলী, জীবনানন্দ দাসের কবিতা ও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা। তাঁর কন্ঠে চন্ডী পাঠ শুনে মুগ্ধ হয়েছিল আমেরিকা প্রবাসী বেশ কিছু বাঙালি তরুণ তরুণী।। তাঁর লেখা বিভিন্ন বিষয়ের প্রবন্ধ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ছাপা হয়েছে।

        ৬ই মে ২০২১এর দুপুরে তিনি চলে গেলেন অমৃতলোকের পথে, হয়তো আরোও কোন বড় কাজের দায়িত্ব নিতে। তাঁকে জানাই আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম।

 

লোপামুদ্রা সিংহদেব। (সদস্য, জামশেদপুর শাখা।)

5 comments:

  1. This comment has been removed by the author.

    ReplyDelete
  2. আমাদের পথপ্রদর্শক, একান্ত আপনজনকে জানাই প্রণাম। তাঁর অভাব অপূরনীয়।

    ReplyDelete
  3. অঞ্জলিদির মহাপ্রয়াণে ঝাড়খণ্ড এবং বিহার উভয় বাঙ্গালি সমিতির অপূরণীয় ক্ষতি হল। ওনার সমিতির প্রতি নিষ্ঠা ও কর্তব্য পরায়ণতা প্রশংসনীয় ছিল। বিদ্যাসাগর স্মৃতি রক্ষা সমিতিতে অঞ্জলিদির অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রয়াত দিদির অমৃতালোকে চিরশান্তির কামনা করি।

    ReplyDelete
  4. অঞ্জলিদি নন্দনকাননে বিদ্যাসাগর স্মৃতি রক্ষা সমিতির প্রাক্তন চেয়ারম্যান ছিলেন।

    ReplyDelete

  5. অঞ্জলীদির আত্মার শান্তি কামনা করি।উনি আমাকে খুব ভালোবাসতেন। ভালো বই পেলে নিজে পড়ার পর আমাকে উপহার দিতেন। এখনো কয়েকটি বই উনার স্মৃতি বহন করছে। শ্রদ্ধাঞ্জলি।

    ReplyDelete

বর্ণপরিচয়