পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর: মেদিনীপুর সমন্বয় সংস্থা

 সুধী,

আধুনিক বাংলা গদ্যের সার্থক রূপকার তথা বাংলা নবজাগরণের উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, এবং স্বাধীনতা আন্দোলনে অখণ্ড মেদিনীপুরের সক্রিয়তা নিয়ে যে কীর্তিগাথা রচিত হয়েছে তা প্রত্যেক মেদিনীপুরবাসীকে গৌরবান্বিত করে। তবে কোনটা বেশি তার তুল্যমূল্য বিচার বোধহয় আমরা কেউই করতে পারব না।

এহেন বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জন্ম-দ্বিশতবর্ষ পূর্ণ হবে ১২ আশ্বিন, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০। অতিমারি করোনার আবহে যথাযোগ্য মর্যাদায় তাঁর জন্ম-দ্বিশতবর্ষ পালন করা সম্ভব হয়নি। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার গাইড লাইন মেনে কঠোর নিয়ন্ত্রণের পর কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকার আনলক-৪ চালু করলেও আমরা বুঝতে পারছি যে করোনার  ভয়াবহতা   কিছুটা নিয়ন্ত্রিত হলেও তার প্রকোপ ক্রমশ বেড়ে চলেছে। তবে আনন্দের সাথে বলা যায় যে এত প্রতিকূলতার মাঝেও মেদিনীপুর সমন্বয় সংস্থা বিদ্যাসাগরের জন্ম-দ্বিশতবর্ষ পূরণের জন্মমাস জুড়ে নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।  প্রথমত ভার্চুয়াল সভায় আলোচনা ও হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে  তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন লেখা,ছবি,তথ্য প্রকাশ করে যথার্থভাবে শ্রদ্ধা জানানো হবে। দ্বিতীয়ত বিদ্যাসাগরের চরিত্রের বলিষ্ঠতা, পৌরুষত্ব, কর্মনিষ্ঠা, নারীকল্যাণ তথা মানবকল্যাণে নিবেদিত প্রাণ, স্বনির্ভরতা প্রভৃতি আত্মস্থ করে আমাদের প্রাণাধিক  প্রিয় মেদিনীপুর সমন্বয় সংস্থাকে স্বাবলম্বী করা হবে। তার প্রথম পদক্ষেপ সংস্থাকে ঋণমুক্ত করা, দ্বিতীয় পদক্ষেপ অখণ্ড মেদিনীপুরবাসীর কল্যাণে ঝাঁপিয়ে পড়া। এই উদ্দেশ্যসাধনে পু্রো সেপ্টেম্বর মাস জুড়ে 'অনুদান সংগ্রহ অভিযান' চলবে। এই দুরূহ প্রয়াস সফল করতে 'মেদিনীপুর ভবন নির্মাণ তহবিল'এ মেদিনীপু্র সমন্বয় সংস্থার প্রত্যেক সদস্য/সদস্যা ও শুভাকাঙ্ক্ষী কে সাধ‌্যমত অনুদান দেওয়ার আহ্বান জানাই। আগ্রহী অনুদানকারীকে  সাধারণ সম্পাদক প্রঃ শিঃ রতিকান্ত মালাকার(9433818694) কিংবা আমার সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানাচ্ছি।

 শুভেচ্ছাসহ

অধ্যাপক প্রণবেশ জানা

প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক

মেদিনীপুর সমন্বয় সংস্থা।

(9432261432)

৩১/০৮/২০২০।

অপরাধবোধ : বিকাশ দাস (মুম্বাই)

 অপরাধবোধ

                                                   বিকাশ দাস (মুম্বাই)

তুমি বলো 
শরীর  বয়সের বশে  থাকলে 
অপরাধ
অশুচির  গন্ধ  গায়ে  মাখলে 
অপরাধ
মাথার উপর ভগবান পায়ের নীচে শয়তান 
মুখের আদল বদলে   খুঁজতে হবে অবসান

তুমি বলো 
ফিরে যাও ঘরে  দু’হাতে রেখো ধরে 
দুঃখের দিন সুখের দিন ঘরের কোটর
খোলামেলা  চাতাল
সূর্যের ভোর আকাশের রোদের চাদর 
ফুলতোলা   সকাল

তুমি বলো
দেনার ভার দু’হাতে থাকলে 
অপরাধ
কর্তব্য    দায়সারা  রাখলে 
অপরাধ

তুমি বলো 
ফিরে যাও ঘরে দু’হাতে রেখো ধরে 
বারোমাস তেরো পার্বণ  আদর আপ্যায়ন 
সম্প্রীতির দরবার
দুই প্রান্তের ঘর উঠোন পৃথিবীর নিকেতন 
একান্নবর্তী সংসার

***

শিক্ষক দিবস


 

ভাদু পার্বন

 ভাদু পার্বন

 



গ্রাম ঝাড়খণ্ডে চলছে ভাদু পার্বণের ধুম। গ্রামাঞ্চলে ধান রোয়ার পর ভদ্র মাসে খেতমজুরেরা এক মাস ব্যাপী ভাদু পার্বন করে। এই সময় ভাদুর প্রতিমা কে নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ভাদুর গান ও নৃত্য পরিবেশন করে চাল ও ভুট্টা সংগ্রহ করে মাসের শেষ দিন সাড়ম্বরে পালিত হয় ভাদুর জাগরণ। ভাদু ছিলেন কাশিপুর এর রাজার কন্যা ভদ্রাবতি। গ্রেটার বাংলার কাশিপুর বর্তমানে পুরুলিয়া জেলার অন্তর্ভুক্ত। ভদ্রাবতি সর্ব সাধারণ এর জন্য সেবা মুলক কাজ করতেন।গ্রামে গ্রামে কূপ ও পুকুর নির্মাণ করিয়ে ছিলেন ভদ্রাবতির অকাল প্রয়াণের পর তারই স্মৃতির উদ্দেশ্যে বীরভূম, বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও অধুনা ঝাড়খন্ডের সাঁতাল পরগনা, ধানবাদ এলাকায় পালিত হয় ভাদু পার্বন। ১৯১১ সালে পশ্চিম বঙ্গের অঙ্গছেদ করে বিহার ও২০০০ সালে ঝাড়খন্ড রাজ্য গঠন করা হয়। তবে ১০৯ বছর পর ও এখানে ভাদু পার্বন আয়োজন অব্যাহত আছে।

প্রতিবেদক  - গৌতম চট্টোপাধ্যায় ।

ভবিতব্য : বিকাশ দাস (মুম্বাই)

 

ভবিতব্য

                                                                         বিকাশ দাস (মুম্বাই)

যাওয়াই  ভালো 
দু’পায়ে অন্ধকার ঠেলে আর এক নতুন অন্ধকারে
যাওয়াই  ভালো 
আলোর সাঁকো ফেলে আর এক নতুন অন্ধকারে ।
এখন 
মাকড়সার জালে ভর্তি  দেশের বাড়ি 
বেঁচে থাকার    তাগিদে বিদেশ পাড়ি 
জেনেও ....
একদিন  আসতে হবে ফেরত ঘরে 
সম্পর্কের সৌরভে  দু’হাত চার করে ।
দুটি হাত দুটি প্রান্ত 
সতর্ক রেখে 
দু’হাত এক করো বা আলাদা করো 
ভগ্নাংশের মধ্যেই খুঁজে নিতে হবে তোমার অবশিষ্ট 
আকাশ মাটির গন্ধ তোমার ভবিতব্য  
যদিও 
তোমার দু’হাত আজ সর্বস্বান্ত অথর্ব  
ছেঁড়া ঘুড়ির মতো জীবনের সুতোয় 
একলা কাঁটাতারে

***

দ্বিশত বর্ষের প্রাক্কালে ! : দেবাশীষ মিশ্র, জামতাড়া

 

দ্বিশত বর্ষের প্রাক্কালে !

                          দেবাশীষ মিশ্র, জামতাড়া

ভুলে গেলেই তো ভালো হয়,

অনেককেই তো ভুলে গেছ

কোন প্রয়োজন আছে কি মনে পড়ানোর?

চলমান সমাজের বিস্মৃতির অতলে সবকিছু!

মনে করাতে চাইলেও, মনে ধরেনা।

 

রাস্তার মোড়ে মুন্ডপাত

অকারণে কালিমালেপন!

কে বলে তোমাদের এইসব করতে?

অনেক ধ্বংসের পরও সত্য চিরকাল ....

তোমাদের গুরুঠাকুর! তারা বুঝি পারেনা!

সে স্পর্ধা নেই মুখ তুলে দাঁড়ানোর ..

ছবি ছিঁড়ে ফেল, ভেঙে ফেল মসিলিপ্ত মস্তক

 

লজ্জায় মুখ লুকবে কোথায়?

তবুও ওই গ্রামের ছেলেটা প্রতিদিন ..

একলা বসে আগলায় আমাকে।

জানো তো আমি ঈশ্বর নই মোটেও!

নাম শুধু আমার ঈশ্বর .....

অক্ষয় কুমার দত্ত: শ্রদ্ধাঞ্জলি


যিনি এই ভিডিওতে নিজের বক্তব্য রাখছেন, তাঁর পরিচয় এখনও পাইনি। তবে আমরা চেষ্টা করছি। 

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জয়ন্তী প্রস্তুতি বৈঠক

 

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জয়ন্তী

আগামী ১৭ই সেপ্টেম্বর শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জয়ন্তী’কে সাফল্যমন্ডিত করতে ‘ভাষা কৃষ্টির মিলন মেলা’ ও ‘বিহার বাঙালি সমিতি’, বরারী শাখা এবং চম্পা নগর শাখা যুগ্মভাবে বৈঠক  ২৫ আগস্ট ২০২০ তে. জে. এস. গার্ডেন, বাগবাড়ি, ভাগলপুর’এ আয়োজিত হয়। শ্রী রাজিব কান্ত মিশ্রা দ্বারা বৈঠকের অধ্যক্ষতা এবং পরিচালনা করা হয়।



নিম্নলিখিত আলোচ্য বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়:-

১. ভাগলপুর স্টেশনে ডি.আর.এম. মালদার, অনুমতিতে শ্রী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এক তৈলচিত্রের ভাগলপুর স্টেশন প্রাঙ্গণে অনাবরণ করা।

২. ভাগলপুর স্থিত শরৎচন্দ্র পথ এর প্রারম্ভিক এবং শেষভাগে দুটি প্রস্থরপট এর স্থাপনা করা।

৩. মানিক সরকার ঘাট রোড এর শুরুতে একটি ভব্য দ্বার বানানো, যার এন.ও.সি ভাগলপুর মিউনিসিপ্যালিটির কাছ থেকে আগেই পাওয়া গেছে। তৎকালীন জেলা প্রশাসক এর দ্বারা একটি প্রস্থরপটের স্থাপনা করা হয়। স্থাপনের সময় ভাগলপুরের তৎকালীন নগর আয়ুক্ত, এসডিএম, পৌরপতি ও স্থানীয় কাউন্সিলর শ্রী গুড্ডু দুবে এবং শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

৪. বৈঠকে নির্ণয় নেওয়া হয় যে শ্রী অশোক কুমার, শ্রী কিশোর কুমার এবং শ্রী অনুপ কুমার এর বাল্যজীবন এবং মামার বাড়ি এই ভাগলপুরে অবস্থিত ছিল। তাহাদের হিন্দি এবং বাংলা সিনেমা জগতে মহান অবদানের জন্য আমাদের কাছে এটা খুব গর্বের বিষয়। তাদের এই মহান অবদানের কথা মাথায় রেখে আমরা পরিকল্পনা করেছি যে আগামী দিনে তাদের স্মৃতিতে  বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা।

প্রতিবেদক – সুবোধ ভৌমিক

শহীদ ক্ষুদিরাম বোসের মূর্তি পুনঃ প্রতিষ্ঠা করার দাবিতে ডেপুটি কমিশনার আশু নিষ্পত্তির প্রতিশ্রুতি দিলেন।

 

শহীদ ক্ষুদিরাম বোসের মূর্তি পুনঃ প্রতিষ্ঠা করার দাবিতে ডেপুটি কমিশনার আশু নিষ্পত্তির প্রতিশ্রুতি দিলেন।    

                     

মঙ্গলবার (২৫.০৮.২০২০) শহীদ ক্ষুদিরাম বোস স্মারক সমিতির পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল, সারায়কেলা-খারশোয়া জেলার ডেপুটি কমিশনার ইকবাল আলম আনসারি’কে স্মারক পত্র দিয়ে চন্ডিলে গোল চক্করে শহীদ ক্ষুদিরাম বোসের আবক্ষ মূর্তিটি পুনঃ প্রতিষ্ঠার দাবি করেছেন। ডেপুটি কমিশনার আনসারি বাবু স্মারক সমিতির সভাপতি মনোজ বর্মা, সচিব আশু দেব মাহাতো, রুদিয় পঞ্চায়েতের মুখিয়া জ্যোতি লাল মোহলি, অনিল সিং সরদার, অনন্ত মাহাতো, হারাধন মাহাতো, অনুরাধা মাহাতো’কে বিষয়টির আশু নিষ্পত্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। শহীদ ক্ষুদিরাম বোস স্মারক সমিতি ২০১৬ থেকে এখানে চন্ডিলের গোল চক্করে শহীদ ক্ষুদিরাম বোস এর তিরোধান দিবস পালন করে আসছে। ২০১৯ শহীদ ক্ষুদিরাম বোসের তিরোধান দিবসের পূর্বে এখানে আবক্ষ মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়। কুর্মি সেনা নামক একটি সংগঠন ওই চকে জেএমএম এর প্রয়াত নেতা সুধীর মাহাতোর আবক্ষ মূর্তি স্থাপনের দাবি করে ওই চকে ক্ষুদিরাম বোসের তিরোধান দিবস পালনের বিরোধিতা করে। চন্ডিলের এস ডি ও ড০ বিনয় কুমার মিশ্র পুলিশ বাহিনীর সাহায্যে আবক্ষ মূর্তিটি উপড়ে নিয়ে যান। সেই সময় থেকে স্মারক সমিতি ও বিভিন্ন সংগঠন পূর্তিটি পুনঃ প্রতিষ্ঠার দাবি করে আসছে। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষা সমিতি, ঝাড়খন্ডের পক্ষ থেকে রাজ্যপাল, পূর্ব মুখ্যমন্ত্রী, প্রধান মন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির কাছে বিষয়টি তুলে ধরে মূর্তি পুনঃ প্রতিষ্ঠার দাবি করে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সেক্সন আধিকারিক রাজীব রঞ্জন কুশবাহ রাজ্যের চিফ সেক্রেটারি’কে ৬/৯/২০১৯ পত্র দিয়ে বিষয়টির আশু নিষ্পত্তির আদেশ দেন। চিফ সেক্রেটারি বিষয়টি এড়িয়ে যান। বর্তমান জেএমএম সরকারের নগর উন্নয়ন ও আবাস বিভাগের এডিশনাল সেক্রেটারি চন্দন কুমার গত ২৯ জুন ২০২০ সারায়কেলা খারশোয়া জেলার ডেপুটি কমিশনার’কে পত্র দিয়ে বিষয়টির আশু নিষ্পত্তি করার অনুরোধ করে ওই পত্রের প্রতিলিপি বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষা সমিতি ঝাড়খন্ডের সেক্রেটারি গৌতম চট্টোপাধ্যায়’কে পাঠিয়েছেন। মঙ্গলবার স্মারক সমিতির পক্ষ থেকে ওই পত্রের প্রতিলিপি ডেপুটি কমিশনার’কে দিয়ে আশু নিষ্পত্তি করার অনুরোধ করেছেন। ডেপুটি কমিশনার ইকবাল বাবু বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে যথাযোগ্য ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

  প্রতিবেদক- গৌতম চট্টোপাধ্যায়, দুমকা।

ডা0 সুভাষ মুখোপাধ্যায়: মেডিক্যাল কলেজের নামকরণ দাবী: ঝাড়খন্ড বাঙালি সমিতি, হাজারীবাগ শাখা

 ডা0 সুভাষ মুখোপাধ্যায়: মেডিক্যাল কলেজের নামকরণ দাবীঝাড়খন্ড বাঙালি সমিতি, হাজারীবাগ শাখা




ঝাড়খন্ডের গৌরব টেস্ট টিউব বেবির জনক ডা০ সুভাষ মুখোপাধ্যায় এর নামে হাজারীবাগ মেডিক্যাল কলেজের নামকরণ করার জন্য ঝাড়খন্ড বাঙালি সমিতির হাজারীবাগ শাখা মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেন এর হস্তক্ষেপের দাবি করল। সমিতির পক্ষ থেকে সভাপতি ড০ সজল মুখার্জি ও সেক্রেটারি চিন্ময় কুমার সরকার মুখ্যমন্ত্রী’কে চিঠি দিয়ে নামকরণ এর দাবি করেছেন। গত ১৬ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের দিন মুখ্যমন্ত্রী মহান স্বাধীনতা সংগ্রামী শেখ ভিখারির নামে মেডিক্যাল কলেজ হাজারীবাগ এর নামকরণ এর ঘোষণা করেন। সমিতির সভাপতি বলেছেন সমিতি শেখ ভিখারিকে সম্মান করে। তবে দীর্ঘ দিন থেকে হাজারীবাগ মেডিক্যাল কলেজের ডা০ মুখোপাধ্যায়ের নামে নামকরণ করার দাবি করে আসছে সমিতি। মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে পূর্বে ডেপুটি কমিশনার রবিশঙ্কর শুক্লা ডা০ মুখোপাধ্যায় এর আবক্ষ মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন স্থানীয় এম. এল. এ. মনীশ জয়সওয়াল ও মেডিক্যাল কলেজের নামকরণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী’কে বিষয়টি পুন বিবেচনা করার দাবি করেছেন।

প্রতিবেদক- গৌতম চট্টোপাধ্যায়, দুমকা।

গৌতম ঘোষ


 গৌতম   ঘোষ


দা সেন্টার ফর কন্সিয়াসনেস স্টাডিজ, য়ুনিভারসিটি অফ এরিজোনা, ইউ. এস (Centre for Consciousness Studies, University of Arizona, U.S.A) দ্বারা প্রত্যেক বছর (১৯৯৪ থেকে) দা সায়ন্স অফ কন্সিয়াসনেস কনফারেন্স (the Science of Consciousness Conference) আয়োজিত করা হয় কন্সিয়াসনেস বা চেতনার বিষয়  বৈজ্ঞানিক, দার্শনিক আরো বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে মতামতের আদান প্রদান করা হয়ে থাকে সেপ্টেম্বর ২০২০তে এই কনফারেন্স অনলাইন আয়োজিত হচ্ছে পাটনা নিবাসী শ্রী  গৌতম   ঘোষ (সদস্য, পাটলীপুত্র শাখা, বিহার বাঙালি সমিতি) চেতনার বেদান্তিক ব্যাখ্যার সম্বন্ধে রিসার্চ আরটিক্ল এর এবস্ট্রেক্ট এই কনফারেন্স এর জন্য চয়নিত হয়েছে শ্রী ঘোষ  অনলাইনের মাধ্যমে কনফারেন্সে তাঁর বক্তব্য রাখবেন কনফারেন্স’র বিশদ বিবরণী   এবস্ট্রেক্ট (Abstract)  https://consciousness.arizona.edu/    

https://eagle.sbs.arizona.edu/sc/report_poster_detail.php?abs=3959

   তে দেখতে পারেন।

সমিতির পক্ষ থেকে শ্রী গৌতম ঘোষ মহাশয়কে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানানো হচ্ছে।

প্রতিবেদক – প্রতিনিধি ‘সঞ্চিতা’

বিদ্যাসাগর দ্বিশতজন্মবার্ষিকী পালন

 বিদ্যাসাগর দ্বিশতজন্মবার্ষিকী পালন

যৌথ উদ্যোগে

বিদ্যাসাগর দ্বিশতজন্মবার্ষিকী নন্দন কানন উদ্‌যাপন কমিটি (নন্দন কানন, কর্মাটাঁড়, বিদ্যাসাগর)

অল ইন্ডিয়া বেঙ্গলি এসোসিয়েশন (আইবা), নিউ দিল্লী,

ঝাড়খন্ড বাঙালি সমিতি ও বিহার বাঙালি সমিতি


সুধী,

বিদ্যাসাগর দ্বিশতজন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষে নিম্নোক্ত বিষয়-প্রেক্ষিতে আমরা বিহার বাঙালি সমিতি’র ইউটিউব চ্যানেলে অনুষ্ঠান করতে আগ্রহী। আপনার সম্মতি সহ কি বিষয়ে বক্তব্য রাখবেন তা জানিয়ে বাধিত করতে অনুরোধ জানাই।

১৫-২০ মিনিটের ভিডিও বানিয়ে (২৫এমবী মধ্যে হলে ভাল হয় Camera in horizontal mode,  Video in MP4 format and size within 25MB) পাঠাতে অনুরোধ জানাই

আপনার বক্তব্য Abstract form or Full Paper/Version বাঙলা ইউনিকোড ফন্টে পাঠাতে অনুরোধ জানাই, তাহলে ইউটিউব চ্যানেলের বিবরণী (Description) (Abstract form) (Full Paper/Version) সঞ্চিতাবল্গে (Sanchitablog) পোস্ট করতে পারব।

দ্বিতীয়তঃ ওয়েবিনার বা ফেসবুক লাইভ অনুষ্ঠানও করতে চাই। কি ভাবে এই অনুষ্ঠান করলে আপনার সুবিধা হবে, তা জানিয়ে বাধিত করতে অনুরোধ জানাই।

 

বিষয়-প্রেক্ষিত

কলকাতার মানুষজন ও আত্মীয়স্বজনের ব্যবহারে মর্মাহত বিদ্যাসাগর, কর্মাটাঁড়ে এসে আদিবাসী মানুষজনের ভালোবাসায় পুনরুজ্জীবিত হলেন এবং তারই সাথে শুরুহল নবজাগরণের নতুন পর্ব। এই নতুন পর্বের জোর ছিল গ্রামসমাজের প্রত্যন্ত মানুষজনের, তথাকথিত অস্পৃশ্য শূদ্রজনের, চাষীর ও শ্রমিকজনতার সেবায়, মনুষ্যত্বে তাদের অধিকারের জন্য লড়াইএএ পথে তাঁর পূর্বসুরী ছিলেন নমঃশূদ্র জাগরণের প্রবর্তক হরিচাঁদ ঠাকুর, সমসাময়িক ছিলেন নীলচাষীদের জন্য লড়িয়ে, হিন্দু প্যাট্রিয়টের সম্পাদক হরিশ মুখার্জি প্রভৃতি ...।  বিদ্যাসাগরের পরে এলেন গ্রামবার্তা প্রকাশিকা'য় চাষীদের দুঃখদুর্দশার কথা প্রকাশ করা কাঙাল হরিনাথ, চা-বাগানের শ্রমিকদের কথা নিয়ে দ্বারকানাথ গাঙ্গুলি, শ্রমিকদের কথা নিয়ে 'ভারত-শ্রমজীবী' পত্রিকার প্রকাশক শশীপদ ব্যানার্জি। বিদ্যাসাগর আদিবাসীদের জন্য বিদ্যালয়, বালিকা বিদ্যালয়, রাত্রি-বিদ্যালয় শুরু করলেন, তাঁদের চাষবাস ভালো করার জন্য কলকাতা থেকে বীজ এনে বিলি করতেন, তাঁদের অসুখবিসুখে পৌঁছে যেতেন দূরদূরান্তের গ্রামে। এখান থেকেই বর্ধমানে ম্যালেরিয়ার প্রকোপে সাধারণ মানুষের সুচিকিৎসা এবং সেবার উদ্যোগ নিলেন তিনি।

বিদ্যাসাগর জনসেবামূলক কাজগুলো প্রথম জীবন থেকেই করতেন। এখানে ফোকাসটা হল যে কর্মাটাঁড়ের, আদিবাসী কৃষক ও গ্রামীণদের বিদ্যাসাগর, বাংলার নবজাগরণেরই বিদ্যাসাগর, তাঁর কাজ নবজাগরণেরই প্রসার। বস্তুতঃ এই প্রসারের ধারাবাহিকতায় আমরা বিশ শতকের ভারতের রাজনৈতিক সামাজিক আন্দোলনের বিভিন্ন অভিমুখগুলো  দেখতে পাই।

নবজাগরণী প্রতিভা বা রেনেশাঁ-ম্যান কখনই হতাশ একান্তবাসী কোনো ব্যক্তি হতে পারেন না। বিদ্যাসাগরও হননি।

আশাকরি আপনার সহযোগিতা পাব।

বিনীত

 সুনির্মল দাশ

সম্পাদক, বিদ্যাসাগর দ্বিশতজন্মবার্ষিকী নন্দন কানন উদ্‌যাপন কমিটি

সমম্বয়সাধক, ‘আইবা’

সাধারণ সম্পাদক, বিহার বাঙালি সমিতি

9430294287

 

নোট: বক্তা আজকের দিনে গণশিক্ষা, মাতৃভাষা, গণস্বাস্থ্য, নারী ক্ষমতায়ন, প্রান্তিক জনসমূদায়ের উন্নয়ন ইত্যাদির সমস্যাগুলো মূল বক্তব্যের সাথে যোগ করতে পারেন।  

 YouTube Channel: Bengalee Association Bihar

 https://www.youtube.com/channel/UCFsdv-WSKmaS1PvXz1TZDZQ

 Sanchitablog: https://sanchita2020.blogspot.com  

 

আনন্দবাজার পত্রিকা: অনলাইন সংস্করণ: ৪ ভাদ্র ১৪২৭, বৃহস্পতিবার: ২০ অগস্ট ২০২০: ই-পেপার থেকে সংগৃহীত

 

৪ ভাদ্র ১৪২৭, বৃহস্পতিবার: ২০ অগস্ট ২০২০: ই-পেপার

তাড়ার অর্থ

নূতন শিক্ষানীতি ঘোষণা করিয়া সরকার জানাইয়াছিল, তাহার প্রয়োগে বিন্দুমাত্র তাড়াহুড়া নাই। তিন সপ্তাহের মধ্যে কোনও অজ্ঞাত কারণে মত পাল্টাইলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক। যথাসম্ভব দ্রুত এই নীতি কার্যকর করিবার জন্য সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের প্রতি আহ্বান করিয়াছেন তিনি। এহেন তাড়া বিস্ময়কর, বিপজ্জনকও বটে! বর্তমানে করোনাভাইরাস-জনিত অতিমারির দাপটে দেশে রীতিমতো জরুরি অবস্থা জারি, যাহার অন্যতম প্রধান শিকার শিক্ষাব্যবস্থা। প্রতিটি স্তরে লেখাপড়া স্তব্ধ। আগামী এক বৎসরে তাহার ভবিষ্যৎ কী দাঁড়াইবে, কাহারও নিকট স্পষ্ট নহে। ছাত্র, শিক্ষক, শিক্ষাবিদ, সরকার সকলেই দিশাহারা। বাদানুবাদ চলিতেছে কেন্দ্র ও বিভিন্ন রাজ্য সরকারের ভিতর, যাহা সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়াইতেছে। সর্বভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং ও ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষার তারিখ পর্যন্ত এখন তীব্র সংঘাতের বিষয়। সর্বস্তরে লেখাপড়াই যেখানে এই ভাবে থমকাইয়া, তেমন সময়ে গোটা দেশের শিক্ষাব্যবস্থার বুনিয়াদি নীতি পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত? এই মুহূর্তে নিকট ভবিষ্যৎই অনিশ্চয়তার অতল জলে, তাহার মধ্যে দাঁড়াইয়া দূর ভবিষ্যতের শিক্ষা-কাঠামো তৈরি? কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ব্যাখ্যা করিয়াছেন, দেশের স্বার্থে সংস্কার চালু করিবার বিষয়ে আর বিলম্ব চলিবে না। প্রশ্ন উঠিবে, কিসের স্বার্থ? কাহাদের স্বার্থরক্ষার কথা ভাবিতেছে সরকার? বিপদগ্রস্ত সময়ে বিপদের মীমাংসা না করিয়া তাড়াহুড়া করিয়া নূতন নীতির প্রয়োগই দেশের স্বার্থরক্ষার প্রকৃষ্ট উপায়এমন ছেলেভুলানো বাক্য কাহাকে শুনাইতেছেন মন্ত্রিবর? দেশের নাগরিককে কি তাঁহারা অবোধ শিশু ভাবেন?

বিষয়টি বিপজ্জনক এই জন্য যে প্রস্তাবিত শিক্ষানীতি লইয়া নানাবিধ আশঙ্কা ও আপত্তি উপস্থিত হইয়াছে, যাহা সমগ্রত রাজনৈতিক বিতণ্ডাবলিয়া উড়াইয়া দেওয়া কঠিন। নূতন শিক্ষানীতি ও তাহার প্রয়োগ লইয়া বিভিন্ন রাজ্য হইতে প্রতিবাদ ও সংশোধনের দাবি ধ্বনিত হইতেছে। পশ্চিমবঙ্গ তাহার অন্যতম। প্রসঙ্গত, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের সহিত আলোচনা করিয়া নীতি প্রস্তুত হইলেও সেই কমিটিতে পশ্চিমবঙ্গের কেহ ছিলেন না। ইহার পরে রাজ্য লিখিত বক্তব্য প্রেরণ করিলেও তাহা অগ্রাহ্য করা হইয়াছে। ভারতীয় সংবিধানমতে, শিক্ষা কিন্তু যৌথ তালিকার অন্তর্গত, এখনও। তবে কী রূপে একটি রাজ্যের বিশেষজ্ঞদের মতামত বিনা সেই রাজ্যের সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থার রূপরেখা তৈয়ারি হয়? কেন রাজ্যের মতামত গ্রহণ না করিয়া কেন্দ্র একক সিদ্ধান্ত লয়? কেন্দ্রীয় নীতি ঘোষিত হইবার পর একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করিয়াছিল রাজ্য। আপত্তির স্থানগুলি চিহ্নিত করিয়া কেন্দ্রের নিকট রিপোর্ট পাঠাইয়াছিল। কিন্তু আপত্তি না শুনিয়াই যদি নীতি প্রযুক্ত হয়, তবে সকল পদ্ধতি, সকল কমিটিই অর্থহীন।

নীতি ঘোষণার সময়েও তাড়াহুড়া বড় কম ছিল নাসংসদকে এড়াইয়াই এত বড় সংস্কার প্রণীত হইয়া গেল। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, তাড়াহুড়ার পিছনে প্রণোদনাটি ঠিক কিসের? শাসক দলের কিছু হিসাব মিলাইবার প্রয়োজন? কী সেই হিসাব? এই মুহূর্তে তাহাদের সম্পাদ্য কার্যাবলির অন্যতম হিন্দি ভাষার প্রচার-প্রসার। নূতন নীতির রূপরেখা দেখিয়া বহু রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ও বিশেষজ্ঞের আশঙ্কা, সরাসরি না হইলেও পিছনের দরজা দিয়া সমগ্র দেশে হিন্দি চাপাইয়া দিবার প্রয়াস আছে বাধ্যতামূলক ত্রি-ভাষা নীতির মধ্যে। এক দেশ এক নীতিনামক রাজনৈতিক ধুয়াটি শুনিতে নেহাত নিরীহ হইতে পারে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ইহার মধ্যে দেশের বহু-সংস্কৃতির বিষয়টি লঙ্ঘিত হইবার বিপুল আশঙ্কা জ্বলজ্বল করিতেছে। বহুভাষিক, বহু-ধর্মী, বহু-সংস্কৃতির ঐতিহ্যকে যে শাসক দল সম্মান করিতে জানে না, তাহার এই অতি-ত্বরান্বিত সংস্কার দেশের অনপনেয় ক্ষতি করিয়া দিতে পারে, সন্দেহ কী।

গাত্রদাহ

সকল মানুষই মরণশীল; কমলাকান্ত মানুষ, অতএব কমলাকান্ত মরণশীল। অবরোহী যুক্তিবিদ্যার এই উদাহরণটি একুশ শতকে হাস্যকর ও দুর্ভাগ্যজনক ভাবে উল্টাইয়া ব্যবহার হইতেছে। সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁহার বান্ধবী রিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠিয়াছে। তাহার তদন্তও হইতেছে। কিন্তু ইহার সমান্তরালেই ঘটিয়া গেল আশ্চর্য ঘটনাঅভিযুক্ত ঘটনাচক্রে বাঙালি বলিয়া সকল বাঙালি নারীর বিরুদ্ধে কদর্য অঙ্গুলি উঠিল। তর্জনের সারাৎসার, মন্দ মেয়ে রিয়া সুশান্তের উপর তুকতাক করিয়াছেন; রিয়া বাঙালি, সুতরাং সকল বাঙালিনিই মন্দ ও পুরুষদের তন্ত্রেমন্ত্রে বশ করিয়া থাকেন। কেহ বলিলেন, বাঙালি মেয়ে মাত্রেই ডাকিনী বা সর্পিণী, ফাঁদে ফেলিয়া কার্যোদ্ধারই তাঁহাদের মতলব।

অভিযুক্তের সূত্রে তাঁহার গোটা জাতি-গোষ্ঠীকে কাঠগড়ায় টানিয়া আনা কেবল কাণ্ডজ্ঞানহীনতাই নহে, চরম মূর্খতারও অভিজ্ঞান। কিন্তু তলাইয়া দেখিলে বুঝা যাইবে, এই অন্যায় বিচারসভা আহ্বানের মূলে রহিয়াছে বৃহত্তর ভারতীয় সমাজের একাংশের নারীবিদ্বেষ তথা বাঙালি-বিদ্বেষ। যে নাগরিকেরা সকল বাঙালি নারী বর্জনের, এমনকি গণ-গ্রেফতারেরও দাবি তুলিলেনবিশ্বাস করিতে কষ্ট হইলেও সত্যতাঁহারা আসলে নারীকে এখনও সম্পত্তি বা পণ্য হিসাবে দেখেন, এবং জাতি হিসাবে বাঙালি নারী-স্বাধীনতায় তাঁহাদের তুলনায় অধিক বিশ্বাস করে বলিয়া, বাঙালি নারী জীবনের সর্বক্ষেত্রে ভাস্বর হইতেছে েদখিয়া গাত্রদাহ ও মর্মপীড়ায় ভুগেন। প্রশাসন হইতে বিজ্ঞান, বিনোদন হইতে ব্যবসা, সাহিত্যক্ষেত্র হইতে শিল্পের অঙ্গনে বাঙালি নারীর অবাধ বিচরণ ও কীর্তিস্থাপন তাঁহাদের চোখে পড়ে না। তবে কিনা, দেখিয়াও না দেখিবার, সজ্ঞানে সরাইয়া রাখিবার এই আচরণ রাজনীতি-প্রভাবিতও বটে। আজিকার ভারতের হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি নারীকে প্রকাশ্যে দেবী ও অন্তরে দাসী হিসাবে দেখিতে চাহে, মানবী নহে। দেবী পূজা পাইলে তৃপ্ত, দাসীর তৃপ্তির কথা ভাবিবার দায় মালিকের নাইকিন্তু মানবীকে লইয়া মুশকিল, তাহার নিজস্ব মতামত আছে। সেই কারণেই শিক্ষা ও সমসময়ের মূল্যবোধ সহায়ে বাঙালি বা অন্য যে কোনও নারীরই অগ্রযাত্রা তাহার সহে না। অপ্রতিরোধ্য কাহাকেও রুখিতে গেলে ব্যক্তিগত ও জাতিগত কলঙ্কলেপনের জুড়ি নাই। সেই জন্যই নারীকে নিয়ন্ত্রণ করিতে পারে নাবলিয়া বাঙালি পুরুষকে বিদ্রুপ, বা টিভি ও চলচ্চিত্রে বাঙালি নারীর রহস্যময়ী বা পরাবাস্তবানুগ চরিত্রায়ণ দেখিয়া অশিক্ষিত নিদানসকল বাঙালি নারীই ডাকিনী।

বাঙালি নারী এই জাতি ও লিঙ্গ-পরিচয়ভিত্তিক বিদ্বেষের প্রতিবাদ করিয়াছেন। আগাইয়া আসিয়াছেন পুরুষরা, অবাঙালি অন্য নাগরিকও। ভোজনরত স্ত্রীর পাশে বসিয়া পাখার বাতাস করিতেছেন স্বামী, সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্রের বিখ্যাত দৃশ্য সমাজমাধ্যমে তুলিয়া কেহ লিখিয়াছেন, স্ত্রীটি কেমন জাদুটোনা করিয়াছে! ইহা নিশ্চিত ভাবেই শ্লেষোক্তি, কিন্তু অন্তরালে রহিয়াছে বহিরঙ্গে আধুনিক সমাজের প্রতি উদ্দিষ্ট এক অভিমান। তবে অভিমানিনী হইয়া বসিয়া থাকিলে বাঙালি নারীর চলিবে না। প্রতিবাদ নিশ্চয়ই কাম্য, কিন্তু সবার উপরে প্রয়োজন শুভ কর্মপথে আগাইয়া যাওয়া। এত দিন যাহা করিয়া আসিতেছিলেন, পূর্ণ বিশ্বাস ও সক্রিয়তায় তাহার সাধন। তাহাই যথেষ্ট।


বর্ণপরিচয়