দ্বিশতজন্মবর্ষ পূর্তিতে শিক্ষাগুরু বিদ্যাসাগর স্মরণে: অম্বিকেশ মহাপাত্র

 দ্বিশতজন্মবর্ষ পূর্তিতে শিক্ষাগুরু বিদ্যাসাগর স্মরণে

অম্বিকেশ মহাপাত্র

 


সারাবিশ্বের মানুষ প্রায় ৬৫০০টি ভাষায় নিজের ভাব প্রকাশ করেন অর্থাৎ কথা বলেন। তারমধ্যে ‘বাংলা’ ভাষায় ভাব প্রকাশ করেন প্রায় ২৬.১ কোটি বিশ্ববাসী। চীনা ভাষায় কথা বলা মানুষের সংখ্যা সবচাইতে বেশী, সেখানে ‘বাংলা’ ভাষার স্থান অষ্টম! আমাদের প্রিয় দেশ বহু ভাষাবাসীর দেশ, বিবিধের মাঝে দেখ মিলন মহান, সেটাই আমাদের গর্ব। সকল ভারতবাসী প্রায় ১২১টি ভাষায় তাঁদের মনের ভাব প্রকাশ করেন। হিন্দি ভাষায় কথা বলা মানুষের সংখ্যা সর্বাধিক, সেখানে ‘বাংলা’ ভাষার স্থান দ্বিতীয়! প্রায় ৯.১ কোটি ভারতবাসী ‘বাংলা’ ভাষাতে কথা বলেন। আমাদের দেশের কাঠামো যুক্তরাষ্ট্রীয়। দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় কেন্দ্র এবং রাজ্যস্তরে মোট ২২টি ভাষা সরকারি কাজে ব্যবহৃত হয়। ‘বাংলা’ ভাষা তাদের মধ্যে অন্যতম। ‘বাংলা’ ভাষা আমাদের পড়শী দেশের জাতীয় ভাষা। দেশবাসীর মায়ের ভাষার নামেই পড়শী দেশের নাম, বাংলাদেশ। দেশ ভাগ সহ ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে ভারতের স্বাধীনতা প্রাপ্তির আগে অধুনা বাংলাদেশ (পূর্বনাম পূর্ববঙ্গ) পশ্চিমবঙ্গ সহ বঙ্গদেশ আমাদের দেশ ভারতবর্ষের অঙ্গই ছিল। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ জন ছাত্র (সালাম, বরকত, রফিক, জব্বর এবং সফিকুর) নিজ মায়ের ভাষা, ‘বাংলা’ ভাষার মর্যাদা রক্ষায় রাষ্ট্রশক্তির গুলিতে শহীদের মৃত্যুবরণ করেছেন। সেকারণে মাতৃভাষা স্মরণে ২১শে ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় দিবস, ‘ভাষা শহীদ দিবস’ হিসেবে অত্যন্ত মর্যাদার সঙ্গে পালিত হয়ে আসছে। পরবর্তী সময়ে UNESCO সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় ২০০০ সাল থেকে ২১শে ফেব্রুয়ারী সারা বিশ্বে প্রতিটি মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

আমার মায়ের ভাষা ‘বাংলা’। সকল মানুষের সুখ-দুঃখের আধার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রবি ঠাকুরের ভাবনা ও উপলব্ধিতে ‘মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধসম’। অর্থাৎ মায়ের ভাষা মায়ের দুধের সমান। প্রাথমিকস্তরে শিশুর জীবনধারণের একমাত্র খাদ্য মায়ের দুধ, শিশুর একমাত্র প্রতিষেধক মায়ের দুধ। শিশু মাতৃগর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর সুতীব্র চিৎকারে তার নিরাপত্তার দাবী জানায়। গর্ভধারিণী মা শিশুকে কোলে নিয়ে দুগ্ধপানের মাধ্যমে একাত্মতা সহ নিরাপত্তা দেন। শিশু মায়ের কোলে নিরাপদ আশ্রয়ে দুগ্ধপানে আনন্দানুভূতি খুঁজে পায়। পরবর্তী সময়ে শিশু মায়ের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে থেকে মায়ের এগিয়ে দেওয়া ‘বর্ণপরিচয়’ মাধ্যমে মায়ের ভাষার বর্ণ/ অক্ষর চেনা শুরু করে এবং পাশাপাশি শিক্ষাঙ্গনে প্রবেশের ছাড়পত্র অর্জন করে। বাংলা ভাষার সেই ‘বর্ণপরিচয়’ প্রণয়ন করেছেন পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। ২৬শে সেপ্টেম্বর ২০২০ পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশতজন্মবর্ষ পূরণ হল। ঈশ্বরচন্দ্র ঊনবিংশ শতকে অমানবিক এবং তীব্র কুসংস্কারাচ্ছন সময়কালে কুসংস্কারমুক্ত মানবিক সমাজের জন্য আন্দোলন গড়ে তুলে ছিলেন। বিশেষ করে ঈশ্বরচন্দ্র মায়েদের অসহায় অবস্থার স্থায়ী সমাধানে মেয়েদের জন্য শিক্ষাব্যবস্থা প্রচলন, বহু বিবাহ রদ এবং বিধবা বিবাহ চালু করতে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেন এবং আন্দোলন গড়ে তোলেন।

পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র আমার প্রথম শিক্ষাগুরু। শুধু আমারই কেন? আমাদের জাতীর শিক্ষাগুরু। জাতির শিক্ষাগুরু বিদ্যাসাগরকে স্মরণে রাখার উদ্যাগে বিদ্যাসাগরের নামে একাধিক বিদ্যালয়, একাধিক মহাবিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়, উদ্যান, রাস্তা, প্রেক্ষাগৃহ, সেতু, মূর্তি, সমবায় ব্যাঙ্ক, প্রতিষ্ঠান, পুরস্কার প্রচলিত রয়েছে। বিদ্যাসাগরের ‘বর্ণপরিচয়’ আমাদের অক্ষর জ্ঞান সহ ‘বাংলা’ ভাষা শিক্ষার প্রথম সোপান। যা পরবর্তী সময়ে নতুন নতুন জ্ঞান অন্বেষণে আগ্রহের সৃষ্টি করেছে। এই প্রেক্ষিতে অত্যাধুনিক ই-বিশ্বে দ্বিশতজন্মবর্ষ পূর্তিতে বিদ্যাসাগরকে নতুনভাবে স্মরণের তোড়জোড়। তারই প্রাক্কালে আমাদের বাংলার রাজধানী তথা দেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী কলকাতা মহানগরে ঈশ্বরচন্দ্র প্রতিষ্ঠিত বিদ্যাসাগর কলেজ প্রাঙ্গনে বিদ্যাসাগরের মূর্তি দুষ্কৃতকারীদের সংগঠিত উদ্যোগে রাস্তায় আছাড় মেরে ভেঙ্গে ফেলে উল্লাস! তারসঙ্গে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চাপান উতোর! বাঙালির হৃদয় আজ রক্তাক্ত ক্ষত-বিক্ষত। জল্লাদ বাহিনী তা জানে না, মূর্তি ভেঙ্গে উল্লাস করে বিদ্যাসাগরের চিন্তা, ভাবনা, সৃষ্টকর্মকে মুছে ফেলা যায় না! আমাদের মায়ের ভাষার বর্ণ পরিচয়ের পথিকৃৎ ধূলায় গড়াগড়ি যাচ্ছে দেখে শুধু কষ্ট পাওয়া নয়, শুধু ধিক্কার নয়, শুধু আক্ষেপ নয়, আসুন আমরা সকলে মিলে বিদ্যাসাগরকে অধিকতর মর্যাদার সঙ্গে স্মরণ করি। তার মধ্যদিয়ে শুধু বিদ্যাসাগরকে নয়, ‘বাংলা’ ভাষা তথা মায়ের ভাষা তথা আমাদের মাকে শ্রদ্ধা জানাতে পারবো।   

১৮২০ সালের ২৬শে সেপ্টেম্বর অধুনা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে দরিদ্র কুলীন ব্রাহ্মণ পরিবারে ঈশ্বরচন্দ্র জন্মগ্রহণ করেন। পিতা ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মাতা ভগবতী দেবী। ৯ বছর বয়সে গ্রামের শিক্ষা সাঙ্গ করে উচ্চ শিক্ষালাভের জন্যে বাবার সঙ্গে কলকাতায় চলে আসেন। বাবা অল্প মাহিনের চাকুরীর কাজে কলকাতায় অপরের বাড়িতে থাকতেন। ঈশ্বরচন্দ্র বাবার সঙ্গে থেকে সংস্কৃত কলেজে পড়াশোনা শুরু করেন। ঈশ্বরচন্দ্র অপরের বাড়ির গৃহস্থালির কাজকর্ম এবং ফাইফরমাস খেটেও লেখাপড়া চালিয়ে যান। আলোর অভাবে ঈশ্বরচন্দ্রকে রাস্তার আলোয় পড়াশোনা করতে হয়েছে। এই রকমের দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে পড়াশোনায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন এবং অনেকগুলি শিক্ষাবৃত্তি অর্জন করেন। সংস্কৃত, ব্যাকরণ, সাহিত্য, অলঙ্কার শাস্ত্র, বেদান্ত, স্মৃতি প্রভৃতি বিষয়ে জ্ঞানার্জন করেন। সেকারণে শিক্ষিত মহল ঈশ্বরচন্দ্রকে একাধারে ‘পন্ডিত’ অপরপক্ষে বিদ্যার সাগর অর্থাৎ ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধিতে ভূষিত করেন। সেই থেকে ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ‘পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর’ হিসেবে জনমনে পরিচিত হয়ে আছেন।

ঈশ্বরচন্দ্র পেশাগত কর্মজীবনে শিক্ষক এবং শিক্ষা প্রশাসনের দায়িত্বে থেকে শিক্ষা প্রসারে এবং সমাজ সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। মাতৃভক্ত ঈশ্বরচন্দ্র মায়ের ইচ্ছে পূরণে এবং মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনস্বরূপ নারী-শিক্ষা প্রসারে প্রথম মেয়েদের জন্য স্কুল স্থাপন করেন; বীরসিংহ গ্রামে, কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতে। ঈশ্বরচন্দ্র চেয়েছিলেন ছেলেদের সঙ্গে মেয়েরাও লেখাপড়া করুক। মেয়েদের শিক্ষার আলোকে না এনে, অন্দরমহলে আটকে রাখলে, সমাজের কল্যাণ হতে পারে না। সেকারণে অমানবিক ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন- কুলীন অর্থাৎ বহু বিবাহ তথা বাল্য বিবাহ প্রথার বিরুদ্ধে সরব ছিলেন। সমাজে অমানবিক অবজ্ঞার শিকার বাল্য বিধবাদের পুনর্বিবাহের জন্য, রক্ষণশীল হিন্দু সমাজপতিদের তীব্র বিরোধীতা সত্ত্বেও, লর্ড ডালহৌসির নেতৃত্বে ব্রিটিশ শাসকদের দিয়ে ‘১৮৫৬ সালে হিন্দু বিধবা পুনর্বিবাহ আইন’ প্রণয়ন করিয়েছিলেন। এবং নিজের একমাত্র সন্তান নারায়ন চন্দ্রের সঙ্গে বিধবার বিয়ে দিয়েছিলেন। রক্ষণশীল সমাজপতিদের প্রতি পদক্ষেপে তীব্র বাধাদান সত্ত্বেও স্পর্ধিত, ব্যতিক্রমী, অনন্য বিদ্যাসাগর কুসংস্কারমুক্ত সমাজ গঠনে আজীবন প্রয়াসী ছিলেন। সেই সময়কালে সমাজ সংস্কারের কাজ সহজ ছিল না। একদিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল, অপরদিকে রক্ষণশীল সমাজপতিদের দাপট। তৎকালীন সমাজে খ্যাতকীর্তি প্রতিভারও অতুলনীয় সমাবেশ ঘটেছিল। রাজা রামমোহন রায়, ডেভিড হেয়ার, হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও, প্রভৃতি সমাজ সংস্কারক বাংলায় নবজাগরণ যুগের সূচনা করেছিলেন এবং এগিয়ে নিয়ে গেছিলেন। সেই বাংলায় নবজাগরণের অন্যতম পথিকৃৎ পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের বিশ্লেষণে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। একাধারে দয়ারসাগর এবং অপরদিকে করুণাসাগর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে চরম প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ শাসকরা শুধু নয়, রক্ষণশীল সমাজপতিরাও সমীহ করে চলতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু স্বাধীন ভারতে জাতীর শিক্ষাগুরুর দ্বিশততম জন্মবর্ষ পালনের প্রাক্কালে বাংলায় শুধু শিক্ষাগুরুর মূর্তি আক্রান্ত হচ্ছে তাই নয়, শিক্ষার অঙ্গন সহ সমগ্র শিক্ষক সমাজকে নানানভাবে আক্রান্ত হতে হচ্ছে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপর রাষ্ট্রের পুলিশ রাত নামার সঙ্গে সঙ্গে আলো নিভিয়ে বর্বরোচিত কায়দায় আক্রমণ করছে, শিক্ষকদের বিনা অপরাধে গ্রেফতার করে হাজতে নিক্ষেপ করছে। তাই শিক্ষাগুরুর দ্বিশতজন্মবর্ষ পূর্তিতে নানান কর্মসূচি পালনের সঙ্গে শিক্ষক এবং শিক্ষার মর্যাদা ফিরিয়ে আনার শপথগ্রহণ করতে হবে। তার মধ্যদিয়ে জাতীর শিক্ষাগুরু পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর স্মরণ সার্থক হবে এবং শিক্ষাগুরুর ঋণ শোধ সম্ভব হবে।   

প্রসঙ্গক্রমে বিদ্যাসাগর সম্পর্কিত দুটি তথ্য উল্লেখের মাধ্যমে আমার শ্রদ্ধাজ্ঞাপন।

এক যে ছিল বিদ্যাসাগর

পূর্ণেন্দু পত্রী

 

এক যে ছিল বিদ্যাসাগর

ভীষণ বাজে লোক

বলতো কিনা বিধবাদের

আবার বিয়ে হোক?

 

এক যে ছিল বিদ্যাসাগর

দেখতে এলেবেলে

চাইতো কিনা লেখাপড়া

শিখুক মেয়ে, ছেলে?

 

এক যে ছিল বিদ্যাসাগর

দেমাকধারী ধাত্

সাহেব যদি জুতো দেখায়

বদলা তৎক্ষণাৎ।

 

এক যে ছিল বিদ্যাসাগর

বুদ্ধিসুদ্ধি কই?

লিখেই চলে লিখেই চলে

শিশুপাঠ্য বই!

 

এক যে ছিল বিদ্যাসাগর

কপালে তার গেরো

ওষুধ দিয়ে বাঁচায় কিনা

গরীব-গুর্বোদেরও!

 

এক যে ছিল বিদ্যাসাগর

মগজটা কি ফাঁকা?

যে যেখানে বিপন্ন তাঁর

জোগানো চাই টাকা?

 

 

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ তাঁর ‘চারিত্র পূজা’ শীর্ষক প্রবন্ধ সংকলনে এই মনীষী সম্পর্কে লিখেছেন- ‘বিদ্যাসাগর এই বঙ্গদেশে একক ছিলেন। এখানে যেন তাঁহার স্বজাতি সোদর কেহ ছিল না। এ দেশে তিনি তাঁহার সমযোগ্য সহযোগীর অভাবে আমৃত্যুকাল নির্বাসন ভোগ করিয়া গিয়াছেন। তিনি সুখী ছিলেন না। তিনি নিজের মধ্যে যে এক অকৃত্রিম মনুষ্যত্ব সর্বদাই অনুভব করিতেন, চারিদিকের জনমন্ডলীর মধ্যে তাহার আসন দেখিতে পান নাই। তিনি উপকার করিয়া কৃতঘ্নতা পাইয়াছেন, কার্যকালে সহায়তা প্রাপ্ত হন নাই। তিনি প্রতিদিন দেখিয়াছেন আমরা আরম্ভ করি, শেষ করি না, আড়ম্বর করি, কাজ করি না, যাহা অনুষ্ঠান করি তাহা বিশ্বাস করি না, যাহা বিশ্বাস করি তাহা পালন করি না, ভুরি পরিমাণ বাক্য রচনা করিতে পারি, তিল পরিমাণ আত্মত্যাগ করিতে পারি না, আমরা অহংকার দেখাইয়া পরিতৃপ্ত থাকি, যোগ্যতা লাভের চেষ্টা করি না, আমরা সকল কাজেই পরের প্রত্যাশা করি, অথচ পরের ত্রুটি লইয়া আকাশ বিদীর্ণ করিতে থাকি, পরের অনুকরণ আমাদের গর্ব, পরের অনুগ্রহ আমাদের সম্মান, অপরের চক্ষে ধূলি নিক্ষেপ আমাদের পলিটিক্স ...... এই দুর্বল, ক্ষুদ্র, হৃদয়হীন, কর্মহীন, দাম্ভিক, তার্কিক জাতির প্রতি বিদ্যাসাগরের এক সুগভীর ধিক্কার ছিল।’

*****************

 

1 comment:

  1. খুব ভালো লাগলো লেখাটা পড়ে।

    ReplyDelete

বর্ণপরিচয়